কচ্ছপ প্রজনন সম্পর্কে জানতে চাই

প্রশ্ন উত্তরCategory: জীব বিজ্ঞানকচ্ছপ প্রজনন সম্পর্কে জানতে চাই
Ziaur asked 3 years ago

কচ্ছপ প্রজনন সম্পর্কে জানতে চাই। এর বাণিজ্যিক বাজার সুবিধা কেমন?


1 Answers
Ziaur answered 3 years ago

কচ্ছপ এক ধরনের সরীসৃপ প্রানী যারা জল এবং ডাঙা দুই জায়গাতেই বাস করে । এদের শরীরের উপরিভাগ শক্ত খোলসে আবৃত থাকে যা তাদের শরীরকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে রক্ষা করে। কচ্ছপ পৃথিবীতে এখনও বর্তমান এমন প্রাচীন প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম।


কচ্ছপের বয়স ও আকার অনুসারে ডিম-ধারণ ক্ষমতার তারতম্য হয়ে থাকে। সাধারণত এদের ডিম ধারণ ক্ষমতা ২-২০টি পর্যন্ত হয়ে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে কচ্ছপের ডিম-ধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কচ্ছপ জলাশয়ের পাড়ে ডাঙ্গাঁয় এসে ডিম দেয়। ডিম দেয়ার পূর্বে স্ত্রী কচ্ছপ পিছনের পা দিয়ে নরম মাটি বা বালিতে গর্ত করে প্রতিটি গর্তে একটি করে ডিম ছাড়ে।

ডিম ছাড়ার শেষ হলে সংরক্ষণের জন্য স্ত্রী কচ্ছপ মাটি দিয়ে ডিম ঢেকে রাখে। কচ্ছপের ডিম গোলাকার থেকে শুরু করে ক্যাপসুল আকারের হয়। ডিমের খোলস অত্যন্ত শক্ত এবং সাদা বর্ণের।

কচ্ছপের প্রজনন সাফল্য, তথা ডিম পরিস্ফুপনের হার প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন, মাটিতে তাপমাত্রা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে । ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে প্রজাতি বিশেষে ৬০ থেকে ১২০ দিন সময় লাগে।  ডিম ছাড়ার এক সপ্তাহের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত বা অতিরিক্ত গরম বা শীতে ডিম নষ্ট হয়ে যায়।

পৃথিবীতে কচ্ছপের ৩৪০টি প্রজাতি রয়েছে যাদের ভৌগোলিক বিস্তৃতি অত্যন্ত ব্যাপক। বাংলাদেশে প্রায় ২৫ প্রজাতির কচ্ছপ রয়েছে। তবে এদের মধ্যে ১১টি প্রজাতি মানুষের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয় যার ৪ টি বিদেশে রপ্তানী করা যায়।

বাংলাদেশে অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রজতিগুলো হল:

১) রুফট টার্টল
২) স্পটেড ফ্লাপ সেল টারটল
৩) পিকক সফট সেল টারটল
৪) এশিয়াটিক সফট সেল টারটল

বাংলাদেশে কচ্ছপের বাণিজ্যক উৎপাদন এবং মুনাফা সম্পর্কিত তথ্যাদি অত্যন্ত অপ্রতুল। উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নরম খোলসধারী কচ্ছপ চাষকালে বছরে এদের দেহের ওজন ৫০০-৬০০ গ্রাম হয়ে থাকে। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় কচ্ছপের বাণিজ্যিক চাষ হয় ।

সে সমস্ত দেশে সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে বাংলাদেশের কচ্ছপ উৎপাদন ও গবেষনা কেন্দ্রের গুলোর সাথে যৌথ গবেষণা পরিকল্পনা প্রণয়ণ এবং বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরী। এর ফলে কচ্ছপ চাষ ও  সংরক্ষণ ব্যবস্থপনা কলাকৌশল উন্নয়নসহ প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি তৈরী করা যাবে।

বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কচ্ছপ চাষ অনেকাংশে কৃত্রিম উপায়ে উৎপাদিত বাচ্চা ও সম্পূরক খাদ্যের উপর নির্ভরশীল। তাই এ চাষ ব্যবস্থাকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কচ্ছপের কৃত্রিম প্রজনন, ব্যাপক পোনা উৎপাদন ও সম্পূরক খাদ্য তৈরীর কৌশল বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা প্রয়োজন।

Your Answer

19 + 20 =

error: Content is protected !!