অপারেটিং সিস্টেম কি এবং কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেমের নাম

কিভাবে.কম এ আপনাকে জানাই স্বাগতম। আজ আমি আলোচনা করবো কম্পিউটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে।  যারা কম্পিউটার নতুন ব্যবহার করছেন বা কম্পিউটার সম্পর্কে ধারনা একটু কম তাদের জন্য এই তথ্যটি কাজে লাগবে আশা করছি।


কারন যে কোন বিষয় শিখার পূর্বে অবশ্যই সেই বিষয়ের প্রাথমিক ধারনা থাকাটা প্রয়োজন। একজন কম্পিউটার ব্যবহারকারীর জন্য অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে ধারনা থাকাটা জরুরি। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেয়া যাক অপারেটিং সিস্টেম কি এবং কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেমের নাম

অপারেটিং সিস্টেম কি ?

বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির বিশ্বে কম্পিউটার একটি নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র। যা একাধিক মানুষের কাজকে খুব অল্প সময়ে সমাধান করে দিতে পারে। অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে এমন একটি সফ্টওয়্যার যা কম্পিউটারের প্রাণ

কম্পিউটারের মেশিনারিজ ভাষাকে আরও সহজতর ভাবে প্রোগ্রামের ইনপুট/ আউটপুট এক্সিকিউশনকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং যা সিডিউলিং, ডিবাগিং, ইনপুট/আউটপুট কন্ট্রোল, একাউন্টিং, কম্পাইলেশন, স্টোরেজ অ্যাসাইনমেন্ট, ডেটা ম্যানেজমেন্ট এবং আনুষঙ্গিক কাজ গুলো করে থাকে।

এক কথায় যে সিসটেম টি কম্পিউটার এর সমস্ত হার্ডওয়ার গুলোর মধ্যে একটি সম্পর্ক স্থাপন করে এবং আমাদের দেয়া তথ্য গুলো ইনপুট করে সেগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে আমাদের কাছে রেজাল্ট আকারে দিয়ে থাকে অর্থাৎ আউটপুট দেয় সেই সিসটেম ই হলো অপারেটিং সিস্টেম ।

কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেমের নামঃ

চলুন আগে জেনে নেয়া যাক বেশ কিছু Oparating System এর নাম যেগুলো বেশির ভাগ সময় ই ব্যবহার হয় ।  আমরা ডেস্কটপ ও মোবাইল, দুই ধরনের সিসটেম এর নাম ই লিস্ট আকারে দিচ্ছি ।

Computer Opareting System

  • Windows
  •  Macintosh Mac বা OS
  • Ubuntu
  • CenoOS
  • Red hat
  • Debian
  • Chromium os

Mobile Oparaing System

  • Android
  • iOS
  • Firefox OS

বর্তমান বাজারে অনেক গুলো অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। কিন্তু বলা যায় শুরুর দিক থেকেই  অপারেটিং সিস্টেমের জগতে মাইক্রোসফট তার আধিপত্য ধরে রেখেছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মাইক্রোসফট তাদের অপারেটিং সিস্টেম গুলোর আপডেট ভার্সন গুলো সত্যিই ব্রিলিয়ান্ট। নিত্যনতুন ভার্সন যেমনঃ Windows 98, Windows xp, Vista, Windows 7, 8, 8.1, 10 এর মতো অপারেটিং সিস্টেম গুলো সত্যিই চমকপ্রদ।

 

Microsoft

 

আমাদের দেশে বলতে গেলে বেসিরভাগ পিসি ইউজার Microsoft এর অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে থাকেন। যদিও বর্তমানের নতুন জেনারেশনদের আগ্রহ বারছে মাইক্রোসফট ব্যাতিত অন্যান্য কোম্পানির OS গুল ঘেটে দেখতে, যেমনঃ Linux, Mack, ইত্যাদি। এগুলো ছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানির আরও অনেক অপারেটিং OS রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে অনেকেরই হয়তো জানা নেই। সেই রকম কিছু অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে নিচে আলোচনা করবো। তার আগে আমরা জানবো কিছু মোবাইলের অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে।

 

মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমঃ

বর্তমানে মোবাইলের আধিপত্য অনেক বেশি। বাজারে আসছে নিত্যনতুন স্মার্ট ফোন আর এই স্মার্ট মোবাইল ফোন গুলো বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মোবাইল ফোনের জন্য যেসকল অপারেটিং সিস্টেম গুলো বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় তার মধ্যে Android OS, iPhone বা iPad এর জন্য iOS, Firefox OS, Windows OS ইত্যাদি।

 

Mobile Operating System

Mobile Operating System

 

উপরের যে সকল অপারেটিং সিস্টেম গুলো সম্পর্কে আলোচনা করলাম এই OS গুলো সম্পর্কে কমবেশি সকলেরই জানা রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক এমন কিছু OS সম্পর্কে, যেগুলোর ব্যপারে সাধারনত আমাদের ধারনা একটু কম।

 

হাইকু (Haiku):

এই রকম একটি OS হল হাইকু। ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকের BeOS নামের একটি অপারেটিং সিস্টেম বাজারে আসে। কিন্তু তারা মাইক্রোসফটের কাছে হার মেনে যায়, যার ফলে একসময় হারিয়ে গিয়েছিল এই অপারেটিং সিস্টেমটি। তবে শেষ পর্যন্ত আবার তারা অনেকটা BeOS এর মতই Haiku নামে একটি নতুন OS বাজারে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে ডিজাইনাররা ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখে আরও সহজ ও আধুনিক করে ডিজাইন করে, যাতে একজন ইউজার সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারেন। তাই এর ইন্টারফেস গুলো অনেক সহজ ও সাধারন এবং মজার। এছাড়াও পরবর্তীতে এটিকে আরও আপডেট করা হয়েছে ফলে এটি দ্রুতগতীর, ব্যবহারে সহজ ও উপভোগ্য।

 

Haiku Operating System

Haiku Operating System

 

রিয়েক্ট ওএস (React OS):

এটি প্রথম তৈরির সময় এর নাম রাখা হয়েছিল Free Win95. মুলত Windows 95 এর হুবহু একটি ক্লোন ওপেন সোর্স তৈরি করা ছিল তাদের মুল উদ্দেশ্য। Windows 95 এর অনুকরনে এটিকে সাজাতে চেয়েছিলেন ডিজাইনাররা। ২০০৪ সালে তারা React OS এর ভার্সন ০.২.০ রিলিজ করে যাতে মোটামুটি ভাবে Windows এর সকল সফটওয়্যার ব্যবহার করা যায়। আকার প্রকার ও ব্যবহারে এটি Windows 95 এর মতই। বর্তমানে এই OS এর ০.৩.১২ ভার্সনটি বাজারে পাওয়া যাবে।

 

React OS

React OS

 

অ্যারোস (Aros):

১৯৮০ দশকের শেষের দিকে অ্যামিগা নামের একটি অপারেটিং সিস্টেম মোটামুটি ভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। কিন্তু এর নির্মাতা কোম্পানি কমোডোর কে দেউলিয়া ঘোষণা করার ফলে এই OS টি বাজার থেকে হারিয়ে যায়। পরে অ্যামিগার মতো করেই তৈরি করা হয় অ্যারোস নামের অপারেটিং সিস্টেমটি। অ্যামিগা অপারেটিং সিস্টেমের অনেক গুলো ভার্সন রয়েছে।

 

Aros Operating System

Aros Operating System

 

ইনফার্নো (Inferno):

এই অপারেটিং সিস্টেমটি তৈরি করতে এক দশকেরও বেসি সময় লেগেছিল বলে দাবি করে এর প্রোগ্রামাররা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল এমন একটি অপারেটিং সিস্টেম তারা ব্যবহারকারীদের উপহার দেয়া যাতে সবকিছু যেখানে খুসি সেখান খেকে শেয়ার করা যাবে।

 

Inferno Operating System

Inferno Operating System

 

কোলিব্রি ওএস (Kolibri OS):

এটি একটি উচ্চাকাঙ্খি অপারেটিং সিস্টেম। এই অপারেটিং সিস্টেমটি সম্পূর্ণ অ্যাসেম্বলি ল্যাঙ্গুয়েসে লেখা। এতে মাল্টিটাস্কিং, গ্রাফিক্যাল ডেস্কটপ, আইপি নেটওয়ার্কিং, USB সাপোর্ট, মিডিয়া প্লে-ব্যাক সহ সকল সুবিধা রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে আকারে প্রকারে ও ব্যবহারে অত্যন্ত চমৎকার একটি অপারেটিং সিস্টেম।

 

Kolibri Operating System

Kolibri Operating System

 

ডেক্স ওএস (Dex OS):

একটু ভেবে দেখুন এমন একটি অপারেটিং সিস্টেম যেখানে Windows এর সবকিছু একসাথে থাকবে। সেরকমি একটি অপারেটিং সিস্টেম হল Dex Os. ডেক্সটপ কম্পিউটারে জন্য জারা Android এর মতো অপারেটিং সিস্টেম খুজতেছেন তাদের জন্য এর বিকল্প কিছু নেই।

 

Dex OS

Dex OS

 

ফ্রি ভিএমএস (Free VMS):

সত্তর ও আশির দশকে Unix এর প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল এই অপারেটিং সিস্টেমটি। স্থিতিশীলতা, গতি ও নিরাপত্তার জন্য সেই সময়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল এই অপারেটিং সিস্টেমটি। কিন্তু পরবর্তীতে আবার সেটি হারিয়ে যায়।

 

Free VMS Operating System

Free VMS Operating System

 

জীনোড ( JNODE):

JNODE হল একটি JAVA Based অপারেটিং সিস্টেম এবং এটি মুলত ডেক্সটপ কম্পিউটারের জন্য। এই অপারেটিং সিস্টেমের মুল উদ্দেশ্য ছিল সব ধরনের JAVA Apps গুলো রান করা। বর্তমানে এই অপারেটিং সিস্টেমের ০.২.৮ ভার্সনটি পাওয়া যাবে।

 

JNODE Operating System

JNODE Operating System

 

সিলেবল (Syllable):

সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম ধর্মী এবং স্বাধিন একটি অপারেটিং সিস্টেম হল Syllable. অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম থেকে এটি একদম আলাদা। ডেক্সটপ টি বিচিত্র রংবেরঙের ডিজাইনে বেশ সুন্দর এবং এর পারফমেন্স ও খুব ভালো।

 

Syllable Operating System

Syllable Operating System

 

বন্ধুরা এই ছিল বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত তথ্য। আমি চেষ্টা করেছি কম্পিউটার জগতের এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলো তুলে ধরতে। হয়তো অনেক ক্ষেত্রেই এই তথ্যগুলো আপনার কাজে লাগতে পারে। যদি আমাদের এই আলোচনা আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে লাইক দিন ও শেয়ার করুন অন্যদের সাথে। এবং কমেন্ট করে আপনার মতামত আমাদের জানান। আমারা চেষ্টা করবো আপনার চাহিদা সম্পন্ন তথ্য গুলো কিভাবে.কম এ দেয়ার জন্য। কারন জানতে এবং জানাতে আপনার পাশে রয়েছে কিভাবে.কম। কম্পিউটার জগতের খুঁটিনাটি জানতে চোখ রাখুন আমাদের সাইটে। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ…

You may also like...

5 Responses

  1. FORUM FOR U says:

    এতো সুন্দর পোস্টটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

  2. নাবিল says:

    অনেক ধন্যবাদ।

  3. sazzad says:

    আমার এ্যান্ড্রয়েড ফোন কিভাবে OS আপডেট করব?

  4. অমৃতসুধা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার says:

    ধন্যবাদ অনেক কিছু শিখলাম৤ দোয়া রইল৤ ভালো থাকবেন৤

  5. রিফাত says:

    লিখা টা পড়ে খুব ভালো লাগল।অপারেটিং সিস্টেম কি ভাবে কাজ করে তার বিস্তারিত ধারনা নিয়ে আর ও একটি আর্টিকেল লিখলে আর ও উপকৃত হতাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!