কিভাবে ব্যাংক ঋণ পাবেন : প্রাথমিক ধারনা
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল ব্যাবসা বা মূল আয়ের উৎস হচ্ছে ঋণ প্রদান। সাধারণত ব্যাংক সমূহ গ্রাহকের নিকট থেকে আমানত গ্রহণ করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত গ্রহণ করে তারা কি করে! আমানত এনে বসিয়ে রাখলেই তো আর তা বেড়ে যাবেনা। তাই ব্যাংক সমূহ আমানত গুলো সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন স্থানে বা বলা যায় বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে। সেই বিনিযোগ থেকে অর্জিত মুনাফাই হচ্ছে ব্যাংকের লাভ বা ব্যাংকের আয়। তাই ব্যাংকের আয় সম্পর্কে জানতে হলে কিভাবে ব্যাংক ঋণ পাবেন তা সম্পর্কে জানতে হবে। আবার ঋণ আপনার জন্য হতে পারে সহায়ক। তাই চলুন আজ আমরা জানার চেষ্টা করি কিভাবে ব্যাংক ঋণ পাবেন, এবং সে সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক ধারণা নিই।
ব্যাংক ঋণ কি? ব্যাংক ঋণ কাকে বলে ?
সাধারণভাবে কারও কাছ থেকে কিছু পরিমাণ অর্থ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গ্রহণ করে উক্ত সময়ের মধ্যই ফেরত দেবার অঙ্গীকারকেই ঋণ বলে।
তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে এটির সংজ্ঞা ভিন্ন।
এসকল ক্ষেত্রে অবশ্যই ঋণের বীপরিতে সুদ বা মুনাফা যোগ হবে।
অর্থাৎ খুব ভালভাবে ঋণ বলতে বোঝায় ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে শর্ত স্বাপেক্ষে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ একটি মুনাফা বা সুদের হারে গ্রহণ করা।
ব্যাংক ঋণ কত প্রকার ? ব্যাংক ঋণের প্রকারভেদ
স্থায়ীত্ব বা মেয়াদ বা সময় অনুসারে এধরণের ঋণকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
- স্বল্পমেয়াদী ঋণঃ
- দীর্ঘমেয়াদি ঋণঃ
স্বল্পমেয়াদী ঋণঃ
খুব স্বল্প সময়ের জন্য প্রদেয় ঋণ সমূহ কে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বলা হয়।
সাধারণত এগুলোর মেয়াদ এক বছরের কম সময় হয়।
তবে বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংকে স্বল্পকালীন মেয়াদ কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা ১৮ মাস মেয়াদ পর্যন্ত ধরা হয়।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে কৃষি ঋণ, প্রবাসী ঋণ, স্বল্পকালীন বা ক্ষুদ্র যান ঋণ ইত্যাদি।
দীর্ঘমেয়াদি ঋণঃ
দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রদেয় ঋণ সমূহকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বলা হয়। তবে এধরণের ঋণে মেয়াদ হয় দুই বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে পার্সোনাল লোন, ব্যবসায়ী লোন, এডুকেশান লোন, হোম লোন ইত্যাদি।
ঋণের ধরণঃ
ব্যাংক ভেদে ঋণের ধরণে পরিবর্তন হয়। বিশেষ করে ঋণের ধরণ বলতে আসলে ব্যাংকের প্রোডাক্ট বা পণ্যকেই বোঝানো হয়।
ব্যাংক ভেদে এর প্রোডাক্ট ভিন্ন হয়। তবে সাধারণভাবে যে ধরণের ঋণ পাওয়া যায় তা হলো-
ক. ব্যাবসায়ী লোন বা বাণিজিক লোনঃ
ব্যাবসায়ীক উদ্দেশ্যে এ ধরণের লোন বা ঋণ প্রদান করা হয়। এর মাঝেও কিছু কিছু ধরণ থাকে। বর্তমানে এস এম ই লোন এবং সি এস এম ই লোন নামেই সহজে পরিচিত।
খ. পার্সোনাল লোন বা ব্যক্তিগত ঋণঃ
ব্যাক্তিগত বিভিন্ন প্রয়োজনে এ ধরনের ঋণ গ্রহন করা হয়। বিভিন্ন পেশার লোকজন এ ধরনের ঋণ গ্রহণ করে থাকে।
যেমন বেতনভোগী, বা বিশেষ পেশাজীবী লোক।
গ. হোম লোনঃ
অনেকেই বাড়ি তৈরি করার জন্য আর্থিক সুবিধা খোজেন।
তাদের কে শর্ত স্বাপেক্ষে বাড়ি তৈরি করার জন্য ঋণ প্রদান করা হয়। তবে এক্ষেত্রে মর্টগেজ দিতে হয়।
ঘ. অটো লোন বা যানবাহন ঋণঃ
অনেকেরই গাড়ি বা শখের মোটর সাইকেল কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা দরকার হয়।
এধরণের ঋণ প্রায়শই স্বল্প মেয়াদী হয়ে থাকে।
ঙ. এডুকেশান লোনঃ
পড়াশোনা বা স্কলারশীপে যাওয়ার জন্য এ ধরণের ঋণ গ্রহন করা হয়ে থাকে।
চ. প্রবাসী লোনঃ
এ ধরণের লোন প্রবাসে যাবার জন্য প্রদান করা হয়।
অনেকেই প্রবাসে যাবার জন্য কিছুটা আর্থিক সাহায্যের দরকার পড়ে।
ছ. কৃষি লোনঃ
কৃষি চাষের জন্য বিশেষ করে কৃষি কাজে সম্পৃক্ত চাষিরা এ ধরণের লোন বা ঋণ গ্রহণ করে।
এধরণের ঋণ বেশিরভাগ সময়েই স্বল্পমেয়াদি ঋণ হয়ে থাকে।
ব্যাংক লোন প্রক্রিয়া খুবই নিরাপদ এবং সুবিধাজনক। তাই আপনার প্রয়োজনে আপনি ব্যাংকের শর্ত পূরণ স্বাপেক্ষে আপনিও গ্রহণ করতে পারেন ঋণ সুবিধা।