রক্ত তঞ্চন বা জমাট: দেহের কোথাও কেটে গেলে বা দূর্ঘটনাজনিত কারণে ক্ষত হয়ে রক্তপাত ঘটলে যে প্রক্রিয়ায় কিছুক্ষণ পরে ক্ষত স্থানে রক্ত জমাট বেধে বা পিন্ড তৈরী করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে তাকে, রক্ত জমাট বা তঞ্চন বলে।
রক্ত জমাট প্রক্রিয়া:
যখন রক্তপাত ঘটে তখন ওই কাটা স্থান এবং ভাঙা অণুচক্রিকা থেকে থ্রম্বোপ্লাসটিন নিঃসৃত হতে থাকে।
ক্ষত অংশের কলাকোষ + ভাঙা অণুচক্রিকা = থ্রম্বোপ্লাসটিন
এই থ্রম্বোপ্লাসটিন রক্তের প্রোথ্রমবিন ও ক্যালসিয়াম আয়নকে থ্রমবিনে পরিণত করে।
প্রোথ্রমবিন + ক্যালসিয়াম আয়ন + ভিটামিন K + থ্রম্বোপ্লাসটিন = থ্রমবিন
থ্রনবিন রক্তস্থিত ফাইব্রিনোজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ফাইব্রিনে পরিণত হয়। ফাইব্রিন ঘন জালকের আকারে রক্তকণিকা গুলিকে আবদ্ধ করে; ফলে রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
থ্রমবিন + ফাইব্রিনোজেন +ক্যালসিয়াম আয়ন + ভিটামিন K = ফাইব্রিন (তঞ্চন)
এইভাবে তৈরী অসংখ্য ফাইব্রিন তন্তু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে একটি জালক তৈরী করে যা রক্ত কণিকাগুলোকে আটকে দেয়। ফলে রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
পরপর অনেকগুলি উৎসেচক ও তাদের কোফ্যাকটরের স্তরীভূত শৃঙ্খল বিক্রিয়ার দ্বারা শেষে থ্রম্বিন নামক একটি উৎসেচকের বিস্ফোরক মাত্রায় উৎপাদন ঘটলে ফাইব্রিনোজেন থেকে ফাইব্রিন জমাট তৈরি হয়ে তার মধ্যে অণুচক্রিকা ও অন্যান্য রক্তকণিকা আটকা পড়ে তঞ্চন-পিণ্ড তৈরি হয়। শরীরের মধ্যে তঞ্চনের কাজ ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা।