সাইনুসাইটিস (sinusitis) : আমাদের মুখমন্ডলের হাড়ের ভিতরে কিছু ফাঁপা জায়গা আছে তাকে সাইনাস বলে। কোন কারণে যদি সাইনাসগুলির মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের জন্য প্রদাহ হয় তখন তাকে সাইনুসাইটিস বলে।
সাইনুসাইটিসের কারণ:
- দাঁত, চোখ, নাকের অসুখ থেকে সাইনোসাইটিস হতে পারে
- ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা অ্যালার্জির কারণেও সাইনোসাইটিস হয়ে থাকে
সাইনুসাইটিস রোগের লক্ষণ বা উপর্সগ:
- সাইনোসাইটিস রোগে প্রচণ্ড মাথাব্যথা হয়। সকালে কম থাকে, দুপুরের দিকে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায় আবার বিকেলের দিকে সামান্য কমে যায়
- হাঁচি হয়।
- কাশি হয়।
- গলার মধ্যে ঢোক গিলতে সমস্যা হয়।
- নাক দিয়ে রক্তপাত হয়। এগুলো হলো নাকের সমস্যা।
- জ্বর জ্বর ভাব থাকে, কোনও কিছু ভালো লাগে না এবং অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যায়
- নাক বন্ধ থাকে। পরীক্ষা করলে নাকের ভেতর পুঁজ পাওয়া যেতে পারে
- সাইনাস-এর এক্স রে করলে সাইনাস ঘোলাটে দেখায়।
সাইনাসের সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়
প্রতিকার:
সাইনোসাইটিসের কারণে মাথব্যথা হয়েছে বলে মনে হলে যতদ্রুত সম্ভব একজন নাক, কান, গলারোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিহিস্টামিন, নাকের ড্রপ এবং ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়। যদি ওষুধপত্রে এই রোগ নিরাময় না হয় তবে সাইনাসের ওয়াশ বা আরও বড় ধরনের অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
প্রতিরোধ:
যারা দীর্ঘমেয়াদী রাইনোসাইনোসাইটিসে আক্রান্ত, তাদের জীবন যাত্রার মানে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন-ঠান্ডা খাওয়া, ঠান্ডা লাগানো নিষেধ, রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করা, বাড়িতে লোমশ গৃহপালিত জীব-জন্তু পোষা যাবে না। যথা- গরু, ছাগল, ভেড়া, কুকুর, বিড়াল, খরগোশ, হরিণ, মহিষ ইত্যাদি। সর্বক্ষেত্রে সূতির কাপড় ব্যবহার করতে হবে। কার্পেট ব্যবহার করা যাবে না। কেরোসিন বা লাকড়ির চুলা ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য সঠিক পরিমাণে সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ করা। বিশুদ্ধ বায়ু সেবন এবং বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। ধুমপান করা যাবে না।
সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। প্রতিদিন নিয়মিত ও প্রয়োজনমতো ব্যায়াম, খেলাধুলা, কায়িক পরিশ্রম করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।