কিভাবে খুশকির সমস্যা দূর করবেন? খুশকি দূর করার উপায়
খুশকির সমস্যা খুবই সাধারণ সমস্যা। নারী-পুরুষ সবাই এই সমস্যার সম্মূখীন হয় এবং খুশকি দূর করার উপায় খোজেন । বিশেষ করে এখন যে সময় চলছে তাতে খুশকির সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে প্রায় প্রত্যেককেই। আর শীতকালে ত্বকের যত্ন একটু বেশিই নিতে হয় ।
খুশকি (Dandruff) নিয়ে চিন্তিত আবাল-বৃদ্ধবণিতা। চুলের খুশকি নিয়ন্ত্রণ রাখা যে চরম অসাধ্য! কিভাবে খুশকির সমস্যা দূর করবেন তা নিয়ে নেহায়েত কম গবেষণা নেই। তবে নানা ধরণের প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেই কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করা যায় চুলের খুশকি। কিভাবে খুশকির সমস্যা দূর করার উপায় চলুন জেনে নেয়া যাক।
খুশকি কি? কি কারণে খুশকি হয়?
প্রথমেই প্রশ্ন আসে খুশকি কি? আসলে মাথার চামড়ার সেই অবস্থা যার কারণে চর্মরেণু আশের মত উঠে আসে ও ঝড়ে পড়ে।
খুশকি বিভিন্ন কারণেই হতে পারে।
তবে গবেষণা বলছে সেবোরেইক ডারমাটাইটিস কিংবা ত্বকের তৈলাক্ত ও চুলকানিপ্রবণ অবস্থার কারণে খুশকি হতে পারে।
মেলাসেজিয়া নামক এক ধরনের ছত্রাক সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাথার খুলিতেই বিদ্যমান।
এটি নতুন ত্বক কোষ জন্মাতে বিশেষভাবে সাহায্য করলেও, ত্বকে ময়লা জমে তেল চিটচিটে অবস্থার মধ্যে এটি খুব বিপজ্জনক।
অতিরিক্ত ত্বক কোষ এরকম অবস্থাতে মরে ঝরে যায়। তাই আমাদের মাথা থেকে ঝড়ে পড়া খুশকি কে মাথার মৃত কোষ বল্লেও খুব ভূল বলা হবে না।
আবার কারও শুষ্ক ত্বক এর কারনেও খুশকি হতে পারে। তবে যদি শুষ্ক ত্বকের কারণে খুশকি হয়, আপনি তা বুঝতে পারবেন। কারণ তখন মাথা ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে শুষ্ক ত্বকের নমুনা দেখা যাবে।
খুশকি হবার কারণে যে বিরক্তিকর অবস্থা সৃষ্টি হয় তা থেকে নিস্তার পাবার জন্য নিম্নোক্ত উপায় গুলো চেষ্টা করা যেতে পারে।
খুশকি দূর করার উপায়
চলুন এবার দেখে নেয়া যাক কি কি উপয় এ খুশকি দুর করা যায় । একে একে জেনে নেই খুশকি দূর করার উপায় গুলো ।
ব্যবহার করে দেখতে পারেন কর্পূর ও নারকেল তেল
বিভিন্ন ধরনের ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ নারকেল তেল ও কর্পূরের তেল।
এ দুটোর মিশ্রণ দিতে পারে খুশকির সমস্যায় খুব ভালো একটি সমাধান।
সেজন্য আধা কাপ নারকেল তেলের মধ্যে এক চা-চামচ কর্পূরের তেল নিন।
মিশ্রণটি একটি পাত্রে নিয়ে পাত্রটির ঢাকনা খুব ভালোভাবে আটকে দিন এবং খেয়াল রাখুন যেন ভেতরে বাতাস না ঢোকে।
এবার প্রতিদিন নিয়ম করে ঘুমাতে যাবার আগে ভালোভাবে মাথায় দিন।
এবার মাথা ভালোভাবে মেসেজ করে নিন, অন্তত ১০ মিনিট সময় নিয়ে করুন।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে খুব ভালো ভাবে ধুয়ে নিন।
টানা দুই সপ্তাহ ব্যবহার করুন।
যদি উপকার পান তাহলে একদিন পর পর ব্যবহার করতে পারেন।
জলপাই এর তেল দূর করতে পারে সমস্যা
জলপাই তেল বা অলিভ অয়েলের ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়।
আমাদের দেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর প্রচুর ব্যবহার হয়।
আপনি যদি নিয়মিত ভাবে জলপাই তেল ব্যবহার করেন, তবে খুশকি কমে যাবে এমন ধারণা করা যেতেই পারে।
কারণ জলপাই তেল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার।
তাছাড়া এটি ক্লিনজার হিসেবেও কাজ করে।
বেকিং সোডা ব্যবহার করেও পাওয়া যেতে পারে উপকার
এ পদ্ধতি ব্যবহারের আগে প্রথমে হালকা পানিতে মাথা ভিজিয়ে নিন।
এবার কিছুটা বেকিং সোডা মাথায় ভালোভাবে মেখে নিন।
কিছুক্ষণ রাখুন, তারপর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
তবে মাথা ধোঁয়ার বেলায় শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না।
প্রথমদিকে ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্ক মনে হবে আপনার কাছে।
তবে খুব দ্রুতই এর উপকারীতা আপনার নজরে আসবে।
লেবুর রসে রয়েছে বিশেষ কার্যকারিতা
দুই টেবিল-চামচ লেবুর রস নিন।
এরপর তা মাথায় চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগান।
এবার মাথা দুইবার ধুয়ে নিতে হবে।
প্রথমে সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
তারপর এক কাপ পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে।
ভালো উপকার পাবেন বলে আশা করা যায়।
ঘৃতকুমারীর রস হতে পারে উত্তম ঔষধ
ঘৃতকুমারীর রস এমনিতেই মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
তবে কেবল মাথা ঠান্ডা রাখাই নয়, একই সাথে এটি খুশকির চিকিৎসায়ও বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
মেথি-তেল ব্যবহার করে পাবেন উপকার
মেথির অনেক গুণাগুণের কথা আমরা জানি। এবার এর আরেকটি গুণের কথা জানুন।
বাসায় থাকা নারকেল তেলের সাথে মেথির তেল মিশিয়ে কয়েকদিন রাখুন।
এক সপ্তাহ পর নিয়মিতভাবে এটি ব্যবহার করুন।
এতে মাথার চুল ও ত্বক উভয়ই ভালো থাকবে।
খুশকি সমস্যা থেকেও পাবেন মুক্তি।
পেঁয়াজের রস ব্যবহার করে খুশকি দূর করার উপায়
খুশকি দূর করণে পেঁয়াজের ব্যবহার সবচেয়ে পুরোনো, সবচেয়ে জনপ্রিয়।
অনেক আগে থেকেই আমাদের দেশের মানুষ এই পদ্ধতি ব্যবহার করে।
এর ব্যবহার বিধিও সহজ।
দুটো বা তিনটা পেঁয়াজ বেঁটে তা মাথায় লাগান।
কিছুক্ষণ রেখে তা ধুয়ে ফেলুন।
এভাবে দুই সপ্তাহ ব্যবহার করতে পারলে ভালো উপকার পাবেন।