কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন পদ্ধতিঃ
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে যে জিনিসটি বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে সেটি হচ্ছে কয়লা। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বড় বড় পাওয়ার প্লান্ট লাগানো হয়। পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের জন্য অনেক বেশি প্রশস্ত জমি প্রয়োজন হয়। আর পানি নিষ্কাশনের জন্য রিজার্ভার বানানো হয়।
সাধারণত একটি প্লান্ট ১ থেকে ২ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে প্রশস্ত হয়। কিন্তু এদের এই জায়গার অর্ধেকেরও বেশি অংশ কয়লা রাখার জন্য দরকার হয়। যেসব প্লান্টে কয়লা উৎপন্ন হয় সেখানে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদ রাখা হয় যা প্রায় ৪০ দিনের বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজন হয়। একটি বিষয় হচ্ছে কয়লাকে যেমন তেমন জায়গায় ফেলে রাখা যায় না। কয়লাগুলোকে মালবাহী রেলগাড়ীতে বহন করে আনা হয় এবং প্রতিটি বগি আলাদা করা হয়।
এরপর একটি একটি করে বগিগুলোকে একটি মেশিনের ভিতরে ঢুকিয়ে সম্পূর্ণ বগিকে উল্টিয়ে দিয়ে কয়লাগুলোকে ইয়ার্ডের ভিতরে ফেলা হয়। এরপর একটি কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে কয়লাগুলোকে সামনের কাজের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। যখন কয়লাগুলো শুষ্ক হয়ে যায় তখন তার আশেপাশের ধুলোবালিকে নিজের দিকে আকস্মিত করে। এরপর যখন বাতাস বয় ধুলোবালিগুলো আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে যায়। তাই এসব ধুলোবালি থেকে বাঁচতে কিছু সময় পর পর পানি দিয়ে ভিজে রাখতে হয়।
এরপর কয়লাগুলোকে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে আর একটি মেশিনের ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় যাতে কয়লার বড় বড় টুকরোগুলো মিহি দানায় পরিণত হয়। ফলে কয়লাগুলো মিহি দানায় পরিণত হয়ে ব্লাক পাউডার তৈরি হয়।
পরবর্তীতে ব্লাক পাউডারকে উত্তপ্ত বয়লারে পাঠানো হয় যাতে করে সহজে আগুন ধরতে পারে। আগুন ধরার পর ভারী যে ছাই হয় সেগুলো নিচে পড়ে যায়। যাকে বলা হয় BOTTOM ASHES আর যে হালকা ছাই থাকে সেগুলোকে বলা হয় FLY ASHES যাকে চিমনির মাধ্যমে ফিল্টার করে পরিবেশে ছেড়ে দেয়া হয়।
এখন যে আগুন থাকে সে আগুন টিউবের উপরে অনেক বেশী তাপ দেয় যার মধ্যে পানি ভর্তি থাকে। উক্ত তাপ পানিকে ভাপে পরিণত করে। ভাপ যখন খুব উত্তপ্ত হয় তখন পাইপের মাধ্যমে সামনের দিকে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পাইপগুলোর উপরে এমন ইনসুলেশন লাগানো থাকে যাতে করে পাইপগুলো ফেটে না যায়।
এরপর টারবাইন বা পাওয়ার প্লান্টের হার্ডোর উপাদান যা হিট এবং প্রেসারকে নিজের উপর দিয়ে নিজেকে Rotate করে। এই Rotation (ঘূর্ণন) একটি কারণে হতে পারে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে হাইপ্রেসার ওয়েপার যখন পাইপ থেকে বের হয় তখন দ্রুত টারবাইনকে হীট করে। কারণ টারবাইনের উপর হীট করার পর ভাপ ঠান্ডা হতে থাকে। তাই টারবাইনের যে অংশ সবার প্রথমে ভাপের সংস্পর্শে আসে তাকে হাইপ্রেসার টারবাইন বলে আর যে অংশ সবার শেষে সংস্পর্শে আসে তাকে লো প্রেসার টারবাইন বলে।
এখন প্রেসারের তারমধ্যের কারণে টারবাইন ঘুরতে শুরু করে। এই টারবাইন ঘূর্ণায়মান থাকার জন্য একটি হাই মেকানিক্যাল এনার্জি উৎপন্ন হয় যাকে পরবর্তীতে বড় জেনারেটরে ট্রান্সফার করা হয়। বড় জেনারেটরের ভিতরে মেকানিক্যাল পাওয়ারের জন্য যে ম্যাগনেটিক ফিল্ড থাকে তা বন্টন হয়ে যায়। এর কারণে এর ভিতরে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়।