নিউক্লিয় শক্তি হতে মানুষের জীবনে যেসব বিপদ বয়ে আনে সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
পরমাণু হতে যেমন বিপুল পরিমাণ শক্তি পাওয়া যায় ঠিক তেমনি পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানাবিধ সমস্যা ও বিপদের আশঙ্কা। যেমন- নিউক্লিয় বিক্রিয়ায় পরমাণু যখন ভাঙ্গে বিভিন্ন পারমাণবিক কণিকা ইলেকট্রন, গামারশ্মি ও নিউট্রন প্রভৃতি নির্গত হয়। এই গামারশ্মি জীব তথা মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। গামারশ্মি মানুষের শরীরে পড়লে শরীর পুড়ে যেতে পারে। এছাড়া জ্বর ও বমি বমি ভাব হয়, অকালে চুল পড়ে যেতে পারে এবং অতিরিক্ত মাত্রায় পড়লে ক্যানসার ও টিউমারে আক্রান্ত এমনকি মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
এগুলো ছাড়া পারমাণবিক প্রকল্প থেকে মানুষের বিপদ বয়ে আনে। এমনি একটি ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থ্রিমাইল এবং সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার চেরনোবিলের পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রের দুর্ঘটনায়। এ দুর্ঘটনায় অনেক লোক মৃত্যুবরণ করে।
এসব পারমাণবিক দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়ায় প্রকল্প এলাকার আশেপাশের বায়ুমন্ডলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছিটে পড়ে। বায়ুর সাথে এ তেজস্ক্রিয় পদার্থ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বায়ুমন্ডল থেকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ মাটিতে পড়লে উদ্ভিদ খাদ্যের সাথে তা গ্রহণ করে। আর কোন প্রাণী উদ্ভিদ হতে ঐ খাদ্য গ্রহণ করলে প্রাণীর দেহে তেজস্ক্রিয় পদার্থ প্রবেশ করে। যেমন- গরু যদি তেজস্ক্রিয় পদার্থযুক্ত ঘাস সেবন করে তাহলে গরুর দুধেও তেজস্ক্রিয় পদার্থ এসে যায়। যে দুধ সেবন মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
পারমাণবিক শক্তি প্রকল্পের দুর্ঘটনা হতে নির্গত হওয়ায় তেজস্ক্রিয় পদার্থ মানুষের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ক্ষতি করে থাকে। এছাড়া এ প্রকল্পের বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এ বর্জ্য পদার্থ অত্যন্ত বিপজ্জনক। পারমাণবিক শক্তি প্রকল্প থেকে অত্যধিক পরিমাণ শক্তি পাওয়া গেলেও এই শক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিপদের আশঙ্কাকে বিবেচনায় রাখা জরুরি। আর খেয়াল রাখতে হবে পারমাণবিক শক্তি মানুষর বিপদে ব্যবহার না করে কল্যাণে ব্যবহার করা হয়।