পালস অক্সিমিটার কি কাজে লাগে
করোনাকালীন গত দুই বছরে অনেকেই পালস অক্সিমিটার নামটির সাথে পরিচিত হয়েছেন । তবে অনেকের কাছেই পালস অক্সিমিটার এর কাজ কি তা অজানা । আজ আলোচনা করবো পালস অক্সিমিটার কি এবং এটি কি কাজে লাগে । এর ব্যবহার পদ্ধতিও তুলে ধরবো।
শুরুতেই জেনে নেই পালস অক্সিমিটার কি?
পালস অক্সিমিটার কি?
পালস অক্সিমিটার হলো হৃৎস্পন্দন অর্থাৎ হার্ট বিট ও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা (blood saturation level) মাপার যন্ত্র। সহজে বহন যোগ্য এবং ছোট হাওয়ায় এটির দাম ও কম। চলে রিমুটের ব্যাটারি দিয়েই । এটি দেখতে নিচের ছবির মতো।
পালস অক্সিমিটার কি কাজে লাগে
উপরের পালস অক্সিমিটার কি এর আলোচনাতেই ধারনা পেয়েছেন যে পালস অক্সিমিটার কি কাজে লাগে । এটি দিয়ে খুব সহজেই যে মানব দেহে রক্তে Oxygen Level পরিমাপ করা যায় । পাশাপাশি এই একটি যন্ত্রের সাহায্যে হার্টবিট বা হৃদস্পন্দন ও পাওয়া যায় ।
চিকিৎসক দের মতে, এই যন্ত্রটি রক্তের মধ্যে আলো প্রবাহিত করে । এবার রোগীর ত্বক সেই আলো কতোটা শুষে নেয় তার উপরে ভিত্তি করে রক্তে অক্সিজেনের পরিমান যন্ত্রটি নির্ধারণ করে।
করোনায় আক্রান্ত রোগী কিংবা মুমূর্ষ রোগীদের ফুসফুস ঠিকমতো কাজ না করলে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে । আর এ সময় টাতে Pulse Oximeter কাজে লাগে রোগীর দেহের অক্সিজেন এর পরিমান দেখতে । পাশাপাশি রোগীর হৃদস্পন্দন ও মনিটর করা হয় একই যন্ত্রের মাধ্যমে।
তো ধারনা পাওয়া গেলো পালস অক্সিমিটার এর কাজ কি । এবার চলুন জেনে নেয়া যাক পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করে কিভাবে সেটা জানার চেষ্টা করি ।
কিভাবে পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করে
সঠিক ফলাফল পেতে যথাযথ ভাবে যন্ত্রটি ব্যবহার করা জরুরী । তবে এটি এমন কঠিন বিষয় নয়, একটু খেয়াল রাখলেই হয়ে যায়।
কোথায় প্লেস করতে হয়?
যন্ত্রটি চালু করে তর্জনী আঙ্গুল অথবা বৃদ্ধা আঙ্গুলের মাথায় যন্ত্রের এক প্রান্ত টিপে ধরে অপর প্রান্ত ঢুকিয়ে দিন।
যারা ডান হাতে বেশি কাজ করেন তারা ডান হাতে প্লেস করবেন ।
আর যারা বাম হাতে বেশি কাজ করনে, তারা বাম হাতে সেট করবেন ।
আঙ্গুল পুরোটা ঢুকিয়ে দেবেন যেনো সেনসর গুলো ঠিকমতো আপনার আঙ্গুল স্পর্শ করে।
আঙ্গলের নোখ যেনো বড় না থাকে এবং নেলপলিশ যেনো না থাকে।
খেয়াল রাখবেন যেনো হাতের তাপমাত্রা সাভাবিক থাকে। হাত ঠান্ডা থাকলে দুহাত ঘষে অথবা অন্যের হাতের সাথে ঘষে সাভাবিক উষ্ণ করে নিতে হবে ।
কীভাবে মাপতে হবে
মাপার আগে অন্তত পাচঁ মিনিট বিশ্রাম নিতে হবে ।
আর হাতের আঙ্গুলটিকে এমন ভাবে রাখুন যেন সাভাবির রক্ত চলাচল করে ।
অধিক আলোতে মাপলে অনেক সময় ভুল তথ্য দিতে পারে, তাই সাভাবিক আলোতে মাপ নিনে হবে।
Pulse Oximeter চালু করুন এবং তর্জনীতে ঢুকিয়ে দিন।
চালু করার পর কিছুটা সময় দিন, সঠিক রিডিং পেতে কিছুটা সময় লাগে । যন্ত্রটি অন্তত এক মিনিট লাগিয়ে রাখুন এবং লাগানো অবস্থাতেই রিডিং নিন ।
রিডিং নেবার সময় খেয়াল রাখুন যেনো নিচের কার্ভটি খাজ কাটা খাজ কাটা হয়। অনেক সময় সঠিক জায়গায় সেট না হলে এটি ঢেউটিন এর মতো হয়না । তবে সঠিক ভাবে লাগানোর পরও যদি উপরের ছবির মতো না হয়, সেবিকার সহায়তা নিন এবং দ্রুত ডাক্তার এর সাথে যোগাযোগ করুন ।
%SpO2 এর নিচের অংশটি হলো রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা এবং ডান পাশের টি হলো হৃদস্পন্দন ।
দিনে অন্তত তিন থেকে চারবার মাপুন এবং সময় ও রিডিং লিখে রাখুন ।
রিডিং এর নরমাল রেঞ্জ
পালস অক্সিমিটার নরমাল রেঞ্জ টা হলো ৯৫% থেকে ১০০% %SpO2 এর ভেলু । তবে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সবশেষ যে গাইডলাইন অনুসারে অক্সিজেনের স্যাচুরেশন যদি ৯৪ অথবা তার বেশি থাকে – তাহলে শঙ্কার কিছু নেই ।
যদি অক্সিজেনের স্যাচুরেশন (%SpO2) ৯৫ % এর কম হয়, তবে অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দিয়েছে ।
যদি সেটি ৯০ % এর ও কম হয়, তাহলে জরুরী ডাক্তার এর সাথে যোগাযোগ করুন ।
পালস অক্সিমিটার কোথায় পাওয়া যায় দাম কতো ?
বাংলাদেশ এ অনেক সার্জিকাল সপগুলোতেই পাওয়া যায় পালস অক্সিমিটার । ঢাকায় প্রেসকাল এলাকায় , তোপখানা রোড এ , অনেক গুলো পাইকাড়ি সার্জিকাল সপ আছে । পাশাপাশি আজকাল অনলাইনেও পাওয়া যায় । আপনি দারাজ অথবা বিডিশপ এ গিয়ে Pulse Oximeter লিখে সার্চ দিলেই পেয়ে যাবেন।
পালস অক্সিমিটার দাম কত ব্র্যান্ড ভেদে ১০০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।