কীভাবে ব্যাংক ঋণ পাব: গুরুত্বপূর্ণ জানার বিষয়

ব্যাংক ঋণ সম্পর্কে আমরা স্বল্প-বিস্তর কিছু জ্ঞান রাখি। পূর্বোক্ত লিখা সমূহে কীভাবে ব্যাংক ঋণ পাব সে সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পেয়েছি। সেই সাথে কি ধরণের যোগ্যতা ও সাধারণ কি ধরণের কাগজ প্রয়োজন হয় তা সম্পর্কে আমরা কিছু ধারণা পেয়েছি। কিন্তু এ সকল বিষয় জানা থাকলেই হয় না। এর বাইরে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস জানতে হয়। আজ তাই কীভাবে ব্যাংক ঋণ পাব, তার জন্য সাধারণ বিষয়ের বাইরেও গুরুত্বপূর্ণ আর কি কি জানতে হবে তা জানার চেষ্টা করব।


প্রায় সময়ই বেশ অনেক গ্রাহক অভিযোগ করে থাকেন যে ব্যাংক ঋণ যেমন জটিল প্রক্রিয়া, তেমনি এতে প্রচুর পরিমাণ সু্প্ত ব্যায় (Hidden Charge) বিদ্যমান থাকে। তাই কীভাবে ব্যাংক ঋণ পাব এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কি কি তা জানা প্রয়োজন।

লোনের জন্য ক্রেডিট স্কোর

এটি এক ধরণের পরিমাপক। সাধারণত এটি ব্যাংক অফিসারের কাজ।

মানে যিনি লোন বা ঋণ প্রদানের কাজটি সম্পাদন করবেন তার কাজ।

গ্রাহকের ক্রেডিট স্কোর এর উপর গ্রাহকের সক্ষমতা যাচাই করা হয়। তার ভিত্তিতে লোন প্রদান করা হয়।

ঋণের সময়কাল

ঋণের সময়কালের উপর ঋণের কিস্তির পরিমাণ নির্ভর করে।

শুধু তাই নয় ঋণের সময়কাল আপনাকে বুঝতে সহায়তা করবে যে আপনি ঋণ গ্রহণের পর তা চালাতে পারবেন কি না।

একই সাথে মূলত আপনি কত টাকা ব্যাংক কে রিটার্ণ করছেন সেটাও আপনি এক ঝটকায় হিসাব করতে পারবেন।

সুদের হার

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা অনুসারে সুদের সর্বোচ্চ হার ৯% করা হয়েছে।

তবে করোনা কালীন প্রণোদনার আওতায় শর্তস্বাপেক্ষে তা ৪% থেকে ৮% অবধি ছিল।

অনেক সময় দেখা যায় কিছু কিছু ব্যাংক এক্ষেত্রে কিছু তারতম্য করে থাকে।

তাই আগে সুদের হার সম্পর্কে নিশ্চিত হউন।

কিস্তির হিসাব নিরূপন

সাধারণত কিস্তির পরিমাণ একই থাকে।

তবে ব্যাংক ঋণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল তা আপনার স্থিতির উপর নির্ভর করে সুদের পরিমাণ নির্ধারন করে।

অর্থাৎ মূল টাকার উপর সুদ নির্ধারণ করে।

একটি উদাহরণ দিচ্ছি।

ধরুন আপনি ১ বছরের জন্য ১ লাখ টাকা ৯% হারে ঋণ গ্রহণ করলেন।

তাহলে আপনার কিস্তির পরিমাণ দাড়াবে ধরা যাক ৮৭০০ টাকা।

যার মধ্যে আসল ৮০০০ টাকা এবং সুদ ৭০০ টাকা।

প্রথম কিস্তি দেবার পর এবার ব্যাংক আপনার কাছে পাবে ৯২০০০ টাকা।

এবার পরবর্তীতে আপনার সুদ হিসাব হবে ৯২০০০ টাকার উপর।

মানে যে টাকা পরিশোধ করেছেন তার কোন সুদ দিতে হবে না।

তবে অনেক ব্যাংক এভাবে হিসাব নাও করতে পারে।

তাই ঋণ নেবার পূর্বে হিসাব খানা এমন কি না তা জেনে নিবেন।

নতুবা আপনার সুদের পরিমাণ বেশি হবে।

লোন আবেদনের চার্জ সমূহ

লোনের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত চার্জ সমূহ প্রযোজ্য হয়-

১. প্রসেসিং ফি: সাধারণত যে পরিমাণ পাশ হয় তার ১% বা ০.৫%।

২. স্ট্যাম্প চার্জ: এটিও লোনের ধরণ এবং পরিমাণের উপর নির্ভর করে।

স্ট্যাম্প চার্জ দুই ধরণের। নন-জুডিশিয়াল এবং এডহেসিভ।

তবে স্ট্যাম্প চার্জ সাধারণ পরিমানের ক্ষেত্রে ৫০০০ টাকার বেশি হয় না।

৩. এক্সাইজ ডিউটি: এটি সরকারি আবগারি শুল্ক।

যা টাকার পরিমাণের উপর নির্ভর করবে।

এতে ব্যাংকের কোন হাত থাকে না।

৪. অন্যান্য চার্জ: লোনের ধরণের উপর নির্ভর করে।

মর্টগেজ ফি, সার্ভেয়ার ফি, উকিলের খরচ ইত্যাদি মূলত লোন যদি বড় ধরণের হয় এবং মর্টগেজ করে লোন হয় তবে প্রযোজ্য হয়।

তাই উপরোক্ত বিষয় সম্পর্কে লোন নেবার পূর্বেই সতর্কভাবে জেনে নিতে হয়।

সেই সাথে সাধারণ মানুষ যে ভুল করেন তা হলো তারা লোন আবেদন ফরমে এবং টাকা পাবার সময় যে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সাইন করেন তা ভালভাবে পড়েন না।

তাই লোন নেবার আগে তা ভালভাবে পড়ুন এবং বুঝুন।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!