শুক্রানু কি?
শুক্রানু হল জীবের পুংজননকোষ। শুক্রানু ডিম্বানুকে নিষিক্ত করার মাধ্যমে জাইগোট তৈরী করে। জাইগোট পরবর্তী্তে কোষ বিভাজনের মাধ্যমে ভ্রুণ গঠন করে।
শুক্রানুর গঠন
মানব শুক্রাণু হ্যপ্লয়েড কোষ অর্থাৎ এতে ক্রোমোসোমের সংখ্যা এর উৎপাদক কোষের ক্রোমোসোম সংখ্যার অর্ধেক।
একটি শুক্রাণু চারটি প্রধান অংশে বিভক্ত।
যথা— ১. মাথা, ২. গ্রীবা ৩. মধ্যখণ্ড ৪. লেজ।
নিচে এসব অংশের বর্ণনা দেওয়া হলো:
১. মাথা: মাথা হচ্ছে শুক্রাণুর সামনের অংশ, যা দেখতে স্ফীতকায়, কোনাকৃতি বা লেন্সের মতো। শুক্রাণুর সম্পূর্ণ মাথা একটি পাতলা সাইটোপ্লাজমীয় স্তরে আবৃত থাকে। মাথার সাইটোপ্লাজমের ভেতরে একটি ডিম্বাকৃতির নিউক্লিয়াসকে ঢেকে থাকে অ্যাক্রোসোম। অ্যাক্রোসোম একটি থলি বিশেষ। আক্রোসোমে উপস্থিত এনজাইমগুলো ডিম্বাণু ঝিল্লিকে গলিয়ে শুক্রাণুর প্রবেশ-প্রক্রিয়া সহজ করে দেয়। অ্যাক্রোসোমের ঠিক পেছনেই এবং মাথার বেশির ভাগ অংশজুড়ে থাকে নিউক্লিয়াস।
২.গ্রীবা: গ্রীবা হচ্ছে শুক্রাণুর মাথার ঠিক পেছনে মাথা ও মধ্যখণ্ডের মাঝখানে অবস্থিত একটি সরু ও স্বচ্ছ সংযোগস্থল। এখানে পরস্পরের সমকোণে দুটি সেন্ট্রিওল থাকে। সেন্ট্রিওলের একটিকে কাছের এবং অন্যটিকে দূরের সেন্ট্রিওল বলে।
৩. মধ্যখণ্ড: সাইটোপ্লাজম, মাইটোকন্ড্রিয়া ও অক্ষীয় সূত্রে গঠিত অংশ হচ্ছে শুক্রাণুর মধ্যখণ্ড। এর মধ্যে মাইটোকন্ড্রিয়ার অংশই বেশি। মাইটোকন্ড্রিয়া প্লাজেলাম সঞ্চালনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দেয়। অক্ষীয় সূত্রটি তার চারপাশের সাইটোপ্লাজমীয় আবরণ মিলে মধ্যভাগের কেন্দ্রীয় মজ্জা গঠন করে। এর পেছনের প্রান্তে একটি গাঢ় রিংয়ের মতো গঠনকে রিং সেন্ট্রিওল বলে।
৪. লেজ: শুক্রাণুর মধ্যভাগের সাইটোপ্লাজম ও মাইটোকন্ড্রিয়ার সমাপ্তি অংশ থেকে শুরু করে পেছনের সবটুকুই লেজ বা ফ্লাজেলাম। এটি শুক্রাণুর দীর্ঘতম অংশ। ফ্লাজেলাম শুক্রাণুকে গতিশীল করে নিষেকের উদ্দেশ্যে ডিম্বাণুর কাছে পৌঁছাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।