ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় – ঘাম কমানোর উপায়
ঘাম, মানব শরীরের একটি সাধারণ বিষয়, খুব স্বাভাবিক ভাবেই হয়। তবে জানেন তো! ঘামের সাথে বিনামূল্যে আসে ঘামের দুর্গন্ধ। ঘামের দূর্গন্ধের কারণে প্রায়শই হতে হয় বিব্রত। সেই সাথে এটা আপনার ব্যক্তিত্বের উপরেও আঘাত হানে। আর তাই আমাদের জানা দরকার ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার উপায় ।
ঘাম জনিত উটকো দুর্গন্ধ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে নিচের ধাপ গুলো ফলো করুন । আশাকরি আপনিও ভালো থাকবেন ।
নিজের গায়ের উটকো ঘামের দুর্গন্ধ প্রায় মানুষই বুঝতে পারে না। তবে বুঝতে পারুন আর না পারুন সাবধানতা অবলম্বন করুন। সাবধান হওয়া তো আর দোষের নয়। কিন্তু কিভাবে ঘামের দুর্গন্ধ দূর হবে সে সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা না থাকলে কোন লাভ নেই। তাই চলুন জানার চেষ্টা করি ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়।
ঘাম কমানোর উপায় কি?
মানব শরীরে ঘাম বা sweat একটি স্বাভাবিক বিষয় এবং নিয়ম করে ঘাম ঝরাতেও হয় শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে ও সুস্থ থাকতে । আর খেলাধূলা করলে কিংবা পরিশ্রম করলে শরীর ঘামবে এটা স্বাভাবিক ।
কিন্তু কারন ছাড়াই দেহের নির্দিষ্ট কোনো এক জায়গায় মাত্রাতিরিক্ত ঘাম হলে সেটা নিয়ে একটু মাথা ঘামাতে হয় ।
মাত্রাতিরিক্ত ঘাম অনেক সময় শারীরিক দুর্বলতার কারনে হয় কিংবা ভিটামিন এর অভাব হলে । অনেক সময় পান থেকে এই সমস্যা হয় । যদি আপনি দেখেন যে নির্দিষ্ট কিছু খাবারের কারনে আপনার অতিরিক্ত ঘাম, তাহলে সেই খাবার গুলো পরিহার করুন । অন্যথায় চিকিৎসক এর পরামর্শ নিন ।
আর স্বাভাবিক ঘাম এর ক্ষেত্রে জেনে নেয়া দরকার কেন শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ হয় এবং এর প্রতিকার কি ?
আরো পড়ুন
কেন শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ হয়?
মানব ত্বকে কিছু ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে। এসকল ব্যকটেরিয়া ইকক্রাইন গ্ল্যান্ড এবং এপোক্রাইন গ্ল্যান্ড থেকে নির্গত ঘাম ভেঙ্গে ফেলে।
এই ঘাম ভেঙে প্রপানয়িক এবং ভ্যালেরিক এসিডে রূপান্তরিত করে। এর কারণেই ঘামের উৎকট দুর্গন্ধ পাওয়া যায়।
কারো কারো মতে, ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে গেলে দূর্গন্ধ হয়। কিন্তু ব্যাকটেরিয়া প্রোটিনকে এসিডে রূপান্তর করলেই এমনটা ঘটে।
কিভাবে ঘামের দূর্গন্ধ দূর করা যায় – ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়
ঘামের দূর্গন্ধ দূর করতে বেশ কিছু নিয়ম ও কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। এতে নিজেকে বিব্রত হবার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন।
আর্ম পিট রাখুন পরিষ্কার
আর্ম পিট বা বগলে ঘামের দূর্গন্ধ হওয়া খুব সাধারণ ব্যাপার। এর কারণ এতে এপোক্রাইন গ্ল্যান্ড এর পরিমাণ খুব বেশি থাকে। আর তাই শরীরের এই অংশে ঘামের উৎপত্তি অনেক বেশি।
তাই নিয়মিত আর্ম পিট পরিষ্কার রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্যবহার করুন anti-bacterial সাবান। এর ফলে কম হবে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন।যার কারণে শরীরে ঘামের পরিমাণ কম হবে, হবে কম দুর্গন্ধ।
এছাড়া আর্ম পিটের লোম পরিষ্কার করতে হবে। শরীরের এই অংশে জমে থাকে লোম। এসব লোম ঘামকে বাষ্পীভূত হতে বাধা দেয় এবং ব্যকটেরিয়া ধরে রাখে যদি নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয়। সে কারণে অবাঞ্চিত এই সকল লোম পরিষ্কার রাখুন।
Deodorant ব্যবহার আজকাল খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি ব্যাকটেরিয়ার জন্য এমন অবস্থার সৃষ্টি করে যা ব্যকটেরিয়া গ্রহণ করতে পারেনা। যার ফলে শরীরে ঘাম হয় কম।
নিয়মিত গোসল করুন গরম পানি দিয়ে
দেহ সুস্থ ও পরিষ্কার রাখতে প্রতিদিন নিয়ম করে গোসল করতে হবে। আর গোসল করার সময় গরম পানি ব্যবহার করলে ভালো উপকার পাবেন।
গরম পানি শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু গরম আবহাওয়ায় তো গরম পানিতে গোসল করা কষ্টকর।
তাই চেষ্টা করবেন কয়েকবার গোসল করার।
ন্যাচারাল ফাইবার যুক্ত কাপড় পরিধান করে পাবেন উপকার
পরিধানের জন্য ব্যবহার করুন সিল্ক, সুতি জাতীয় কাপড়। এ জাতীয় কাপড়ের জন্য ত্বক বদ্ধ হয়ে পড়েনা। ফলে ঘাম হলেও তা খুব সহজে বাস্পায়িত হয়।
পাশাপশি নিয়মিত কাপড় পরিষ্কার করুন, অন্যথায় ঘাম জমা কাপড় থেকে ব্যকটেরিয়া আপনার শরীরে আবার ঘামের দুর্গন্দ সৃষ্টি করবে ।
ঘামযুক্ত পায়ের বেলায় কি করবেন!
পায়ে ঘামের দুর্গন্ধ বিশেষ করে শীতকালে বেশি হয়। এরকম অবস্থায় জুতা খোলার সাথে সাথে পড়তে হয় খুবই বিব্রতকর অবস্থাতে।
গরম পানি যে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে দেয় সে তো আমরা সবাই জানি। সেকারণে হালকা গরম পানি দিয়ে পা ধুয়ে নিন প্রতিদিন।
মোজা কেনার সময় খেয়াল রাখুন যেন কাপড়টা বায়ুরোধী না হয়।
পাশাপাশি প্রতিদিন পরিষ্কারভাবে ধোয়া মোজা পরার চেষ্টা করুন। চামড়ার জুতা পরবেন। এটি পায়ের ঘাম বাষ্পীভূত হতে সহায়তা করে থাকে।
চেষ্টা করুন যেন পরপর দুইদিনের বেশি একই জুতা যেন না পরা হয়।