উদ্ভিদের পাতা এবং দেহের অন্যান্য অংশ সবুজ হওয়ার মূল কারণ ক্লোরোপ্লাস্ট। যা উদ্ভিদ কোষের প্লাস্টিড নামক অঙ্গাণুর মধ্যে থাকে।
যেসব প্লাস্টিডে ক্লোরোফিল নামক সবুজ বর্ণ কণিকা অধিক পরিমাণে থাকে, তাকে ক্লোরোপ্লাস্ট বলে। এই ক্লোরোপ্লাস্ট উদ্ভিদের খাদ্য তৈরিতে সাহায্য করে। সবুজ উদ্ভিদ ক্লোরোপ্লাস্টের সাহায্যে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে।
ক্লোরোপ্লাস্টের গঠন নিচে দেওয়া হলো-
১. আবরণী : সমস্ত ক্লোরোপ্লাস্ট দুই স্তরবিশিষ্ট আবরণী দ্বারা আবৃত থাকে।
২. স্ট্রোমা : আবরণী দ্বারা আবৃত পানিগ্রাহী, কলয়েডধর্মী ম্যাট্রিক্স তরলকে স্ট্রোমা বলে। এতে 70S রাইবোসোম, DNA, RNA ইত্যাদি থাকে। এতে শর্করা তৈরির এনজাইমও থাকে।
৩. থাইলাকয়েড ও গ্রানাম : স্ট্রোমাতে অসংখ্য থলে আকৃতির অংশগুলোকে থাইলাকয়েড বলে। কতগুলো থাইলাকয়েড এক সঙ্গে একটির ওপর আর একটি সজ্জিত হয়ে স্তূপের মতো থাকে। থাইলাকয়েডের এ স্তূপকে গ্রানাম (বহুবচনে গ্রানা) বলে। প্রতিটি ক্লোরোপ্লাস্টে সাধারণত ৪০-৬০টি গ্রানা থাকে।
৪. স্ট্রোমা ল্যামেলি : দুটি পাশাপাশি গ্রানার কিছুসংখ্যক থাইলাকয়েডস্ সূক্ষ্ম নালিকা দ্বারা সংযুক্ত থাকে। এই সংযুক্তকারী নালিকাকে স্ট্রোমা ল্যামেলি (একবচন-ল্যামেলাম) বলে। এতে কিছু ক্লোরোফিল থাকে।
৫. ফটোসিনথেটিক ইউনিট ও ATP-Synthases : থাইলাকয়েড মেমব্রেন বহু গোলাকার বস্তু বহন করে। এদের ATP-Synthases বলে। এতে ATP তৈরির সব ধরনের এনজাইম থাকে। মেমব্রেনগুলোতে বহু ফটোসিনথেটিক ইউনিট থাকে। প্রতি ইউনিটে ক্লোরোফিল-এ, ক্লোরোফিল-বি, ক্যারোটিন, জ্যান্থোফিলের প্রায় ৩০০-৪০০ অণু থাকে।
৬. DNA ও রাইবোসোম : ক্লোরোপ্লাস্টে তার নিজস্ব বৃত্তাকার DNA ও রাইবোসোম থাকে। এদের সাহায্যে ক্লোরোপ্লাস্ট নিজের অনুরূপ সৃষ্টি ও কিছু প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি করতে পারে।
ক্লোরোপ্লাস্টের কাজ:
১. সালোকসংশ্লেষণ ঘটানো
২. খাদ্য সঞ্চয়
৩. উদ্ভিদকে বর্ণময় ও আর্কষণীয় করে।
৪. ফুল , পাতা , ফল রঙ্গিন করে পরাগায়ন ঘটানো
৫. ফটোফসফরাইলেশন ও ফটোরেসপিরেশনে সাহায্য করে।
1 Answers
Your Answer