হাইড্রাকে কেন দ্বিস্তরী প্রাণী বলা হয়?
দ্বিস্তরী প্রাণী: ভ্রণাবস্থায় যে সব প্রাণীর দেহপ্রাচীরের কোষগুলো কেবল এক্টোর্ডাম ও এন্ডোর্ডাম নামক দুটি নির্দিষ্ট স্তরে বিন্যাস্ত থাকে সেসব প্রাণীকে দ্বিস্তর বিশিষ্ট প্রাণী বলে। র্পূণাঙ্গ প্রাণীতে স্তরদুটি যথাক্রমে এপিডার্মিস ও গ্যাস্ট্রোডার্মিস এ পরিণত হয়। এদুটি স্তরের মাঝে মেসোগ্লিয়া নামক একটি স্তর থাকে।
হাইড্রা দ্বিস্তরী প্রাণীর একটি আর্দশ উদাহরণ। তাই হাইড্রাকে দ্বিস্তরী প্রাণী বলা হয়
হাইড্রাদেহের নিডোসাইটের গঠন
নিডোসাইট কোষ হাইড্রার পদতল ছাড়া বহিঃত্বকের সর্বত্র বিশেষ করে পেশি আবরণী কোষের ফাকে ফাকে বা ঐসব কোষে অনুপ্রবিষ্ট থাকে । এটি দেখতে গোলাকার, ডিম্বাকার, নাশপাতি আকার বা পেয়ালাকার। তবে মেসোগ্লিয়া-সংলগ্ন প্রান্তটি সামান্য সরু এবং মুক্ত প্রান্ত চওড়া ও স্ফীত।
নিচে এর গঠন বর্ণনা করা হলো:
১. কোষআবরণী: প্রতিটি কোষ দ্বিস্তরী আবরণে আবৃত। স্তর দুটির মাঝখানে দানাদার সাইটোপ্লাজম এবং কোষের গোড়ার দিকে একটি নিউক্লিয়াস থাকে।
২. নেমাটোসিস্ট: কোষের ভেতরে প্রোটিন ও ফেনলে গঠিত হিপনোটক্সিন নামের বিষাক্ত তরলে পূর্ণ এবং একটি লম্বা, সরু, ফাঁপা ও প্যাঁচানো সূত্রকযুক্ত স্থূল প্রাচীরের ক্যাপস্যুলকে নেমাটোসিস্ট বলে।
প্রকৃতপক্ষে ক্যাপস্যুলের সরু প্রান্তটি প্রলম্বিত হয়ে সূত্রক গঠন করে। সূত্রকের চওড়া গোড়াকে বাট বা শ্যাফট বলে। এতে তিনটি বড় বড় তীক্ষ কাঁটার মতো বার্ব এবং সর্পিল সারিতে বিন্যস্ত ক্ষুদ্রতর কাঁটার মতো বার্বিউল দেখা যায়। স্বাভাবিক অবস্থায় সূত্রকটি থলির ভিতর উল্টো অবস্থায় প্যাচানো থাকে।
৩. অপারকুলাম: এটি ঢাকনার মতো একটি গঠন, যা দিয়ে নেমাটোসিস্টের ওপরের প্রান্ত ঢাকা থাকে।
৪. নিডোসিল: এটি নিডোসাইটের মুক্ত প্রান্তের একপাশে অবস্থিত দৃঢ়, ক্ষুদ্র, সংবেদনশীল রোমের মতো অংশ। এটি ট্রিগারের মতো কাজ করে। ফলে প্যাঁচানো সুতাটি বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়।
৫. পেশিসূত্র ও ল্যাসো: কতগুলো ক্ষুদ্র পেশিতন্তু ক্যাপস্যুলের পৃষ্ঠদেশ থেকে সৃষ্টি হয়ে সাইটোপ্লাজমে প্রবেশ করে। পরে সবগুলো তন্তু একত্র হয়ে নিডোসাইটের বৃন্তের ভেতর দিয়ে মেসোগ্লিয়ার সঙ্গে মিলিত হয়। এ ছাড়া নেমাটোসিস্টের নিম্নপ্রান্তে ল্যাসো নামে একটি প্যাঁচানো সুতা অবস্থান করে।